‌নতুন মরশুমে পুরানো নাটক বন্ধ হোক

খালিদের বিদায় নিশ্চিত। সুভাষ ভৌমিক হয়ত থেকে যাবেন। তাঁর হাতেই পূর্ণ কর্তৃত্ব তুলে দেওয়া হোক। ফেলে আসা মরশুমে কোচ আর টিডি দলটাকে যেভাবে হাস্যকর করে তুললেন, নতুন মরশুমে সেই পুরনো নাটক আর দেখতে চাই না। লিখেছেন সোহম সেন।

তীরে গিয়েও যেন তরী ডুবেছিল ভুবনেশ্বরে। সুপার কাপের ফাইনালে উঠেও হারতে হয়েছিল। একেবারে শোচনীয় পরাজয় বলতে যা বোঝায়, তাই। কেন এমন হল, সেই টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ টেকনিক্যাল লোকেরা করবেন। কিন্তু কোচ এবং টিডি–‌র বিরোধ বিরক্তিকর পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। বিশেষ করে সুভাষ ভৌমিকের মতো পরিণত কোচের কাছে এই বালখিল্যসুলভ আচরণ প্রত্যাশা করিনি। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে কোচের সঙ্গে টিডি–‌র বাক্যালাপ নেই। ফাইনালে ওঠার পর সুভাষ ভৌমিক দুম করে বলে বসলেন, আই লিগে দলটার কোনও প্ল্যানিং ছিল না। তাই কিছু করতে পারেনি। এবার প্ল্যানিং আছে, তাই ফাইনালে উঠেছে।

subhas bhowmik
যদি এমনটা আসিয়ানজয়ী কোচের মনে হয়েও থাকে, তাহলেও কি প্রকাশ্যে বলা উচিত?‌ তাও আবার ফাইনালের আগে?‌ আই লিগেও কিন্তু ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দোরগোড়ায় পৌঁছেই গিয়েছিল। শেষ রাউন্ড পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিল। বেশ, ধরেই নিলাম, প্ল্যানিং ছিল না, তাই চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। সুপার কাপে তো প্ল্যানিংয়ের অভাব ছিল না। তাহলে ফাইনালে এভাবে হারতে হল কেন?‌ আগের দায়টা যদি খালিদ জামিলের হয়, তাহলে পরের দায়টা কেন সুভাষ ভৌমিক নেবেন না? খেলায় হার–‌জিত আছে। কিন্তু সন্তানসম খালিদের সঙ্গে সুভাষ ভৌমিক যে আচরণটা করলেন, তা মোটেই কাঙ্খিত নয়। এতে ইস্টবেঙ্গলেরও সম্মান বাড়ল না। তাঁর নিজের সম্মানও বাড়ল না। ‌
গোটা টুর্নামেন্টজুড়ে ফুটবলাররা বুঝে উঠতেই পারলেন না, তাঁরা কার কথা শুনবেন?‌ কোচের না টিডির? এরপরেও শিক্ষা হল না। ক্লাবের বিদায়ী অনুষ্ঠানেও দুই কোচ দুই দিকে মুখ করে বসে রইলেন। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, খালিদ জামিলকে আর রাখা হবে না। সুভাষ ভৌমিক থেকে যাবেন। নতুন মরশুমেও কি একই কাণ্ড চলবে?‌ এবার সুভাষ ভৌমিককেই বেছে নিতে বলা হোক, তিনি কার সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারবেন। একজন ডিগ্রিধারী কোচ দরকার। কলকাতায় অনেকেই আছেন। অনেকেই ডিগ্রির সুবাদে কোচ হতে (‌কার্যত সহকারী)‌ রাজি হবেন। সুভাষ ঠিক করে নিন, তিনি কাকে চান। কর্তারা এবার অন্তত বুঝিয়ে দিন, আর যেন সেই পুরনো অশান্তি না হয়। এতকিছুর পরেও বলব, দলগঠন থেকে শুরু করে টিম সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব সুভাষের হাতেই তুলে দেওয়া হোক। আশা করব, নতুন মরশুমের সুভাষ পুরনো মরশুমের ত্রুটিগুলো ঝেড়ে ফেলবেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.