ভোটের আগেই হয়ত সরে দাঁড়াতে হবে কমিশনারকে

রক্তিম মিত্র

এই নির্বাচন কমিশনার ভোট পর্যন্ত থাকবেন। যা গতিপ্রকৃতি, তাতে থাকার কথা নয়। যদি এতটুকুও আত্মসম্মান অবশিষ্ট থাকে, তাহলে এবার অন্তত সরে দাঁড়ানো উচিত। নইলে বুঝতে হবে, মেরুদণ্ড তো নেইই, ন্যূনতম চক্ষুলজ্জাটুকুও নেই।

১)‌ দায়িত্ব পালনে তিনি একেবারেই ব্যর্থ। নির্বাচনের দিন ঘোষণা থেকে শুরু। এই দিন ঘোষণার যাবতীয় প্রক্রিয়া শাসককে খুশি করতেই।
২)‌ মনোনয়ন তোলার জন্য সাতদিন সময়!‌ যারা হুমকি দেয়, তাদের পক্ষে এর চেয়ে সুবর্ণ সুযোগ আর কী হতে পারে?‌
৩)‌ সব জেলাতেই মনোনয়ন নিয়ে তুমুল গুন্ডানি। দেখেও চোখে ঠুলি বেঁধে আছেন কমিশনার।
৪)‌ এমনকি জেলাশাসের অফিসও বাদ যাচ্ছে না। সেখানেও অবাধে হামলা চালাচ্ছে শাসক দলের লুম্পেনরা।
৫)‌ মন্ত্রীরা দপ্তরে গেলেন। শাসিয়ে এলেন। সেই সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এলেই বোঝা যাবে, তিনি কতখানি নতজানু ছিলেন।

amarendra sing
৬)‌ অধিকাংশ আসনে মনোনয়ন দেওয়া গেল না। চক্ষুলজ্জার কারণে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একদিন সময় বাড়ালেন। কিন্তু এমন দাবড়ানি খেলেন, নিজেই সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিলেন।
৭)‌ শোনা যায়, শাসক দলের চার মন্ত্রী সকালে তাঁর বাড়িতেই গিয়েছিলেন। নিশ্চয় সৌজন্য বিনিময়ের জন্য নয়। আচ্ছা করে কড়কে দেওয়ার জন্যই।
৮)‌ অল্প কড়কে দেওয়াতেই কাজ হয়ে গেছে। সুটসুট করে নিজের বিজ্ঞপ্তি ফিরিয়ে নিলেন।
৯)‌ কোথায় কেমন সন্ত্রাস হচ্ছে, তার জন্য বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। টিভিতে চোখ রাখারও দরকার নেই। নিজের চেম্বার আর বাড়িতে বসেই হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন।
১০)‌ নির্বাচন কমিশনার নিজেই সন্ত্রাসের শিকার। তাঁকে এসে দাবড়ে দিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী, সাংসদরা। ‘‌অনুপ্রেরণা’ ছাড়া এটা সম্ভব নয়, এটা দিব্যি বোঝেন।
১১)‌ এই ধমক দেওয়া কি এখানেই থামবে?‌ মন্ত্রীরা জেনে গেলেন, কমিশনার মশাই দেখতে যতই নাদুস–‌নুদুস হোন, মেরুদণ্ড নামক বস্তুটিই নেই। একে যখন খুশি ধমকানো যায়।
১২)‌ মন্ত্রীরা ডেমো দিয়ে এলেন। এরপর আর তাঁদেরও দরকার হবে না। পাড়ার কাউন্সিলররা গিয়েও চমকে দিয়ে আসতে পারেন।
১৩)‌ যত দিন যাবে, তাঁকে পুতুল করে রাখার এই চেষ্টা আরও বাড়বে। একবার যখন মাথা নুইয়ে ফেলেছেন, তখন আর তোলার উপায় নেই। ‘‌আজ্ঞাবহ দাস’‌ হয়েই তাঁকে কাজ করে যেতে হবে।
১৪)‌ এক সময় এই সন্ত্রাস সীমা ছাড়িয়ে যাবে। তখন বাধ্য হয়েই হয়ত পদত্যাগ করতে হবে। ঠিক এমনটাই ঘটেছিল সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে।
১৫)‌ মীরা পাণ্ডেরা ব্যতিক্রম। তাই তাঁরা আজও সম্মানীয়। অমরেন্দ্র সিংদের লোকে চিরকার চাটুকার আর মেরুদণ্ডহীন হিসেবেই চিনবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.