সোহম সেন
কাগজে কলমে গরম কাল না পড়লেও রোদ্দুর চোখ রাঙাচ্ছে। বাইরে লু বইছে। এমন সময় দুপুর একটায় কোনও একটা অনুষ্ঠান। তাও আবার কীসের অনু্ষ্ঠান? ক্লাবের ফ্লাড লাইট উদ্বোধন। সেই উদ্বোধন কোথা থেকে? ক্লাবের মাঠেও নয়। অনেক দূরে, সেই পৈলানের কোনও এক ঠাণ্ডা ঘর থেকে।
হ্যাঁ, এভাবেই ইস্টবেঙ্গল আর মহমেডানের ফ্লাড লাইট উদ্বোধন হয়ে গেল। কোনও সন্দেহ নেই, দুই ক্লাবের কাছেই দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকার মতোই। এতদিন শুধু মোহনবাগানের নৈশালোক ছিল। এর জন্য লাল হলুদ সমর্থকদের নিশ্চয় অনেক খোঁচাও হজম করতে হয়েছে। নিজেদের মাঠে আই লিগ আয়োজন করা যায়নি। এমনকী ঘরোয়া লিগের খেলাও খেলতে হয়েছে ভরদুপুরে। অথবা অন্য মাঠে। অনেকদিন ধরেই দাবি ছিল, নৈশালোকের ব্যবস্থা হোক।
তাই বলে এভাবে? ক্লাব কর্তাদের মনে হতেই পারে, মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করাবেন। তাই বলে পৈলানের কোনও একটা সরকারি অনুষ্ঠান থেকে ইস্টবেঙ্গলের ফ্লাড লাইট উদ্বোধন হবে? তাও আবার দুপুর একটায়? সত্যিই, ক্লাবকর্তারা কত অসহায়! এই অদ্ভুত দাবিগুলো মেনে নেওয়া ছাড়া ওঁদের আর কিছুই করার থাকে না। দন্ত বিগলিত করে সায় দিতে হয়।
ক্রীড়ামন্ত্রীই উদ্বোধন করতে পারতেন। কোনও প্রাক্তন ফুটবলারকে দিয়ে উদ্বোধন করানো যেত। পিকে ব্যানার্জিকে ডাকা যেত। আরেক জীবন্ত কিংবদন্তী তুলসীদাস বলরামকে উপযুক্ত সম্মান দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো যেত। তা না করে প্রাক্তনদের ডেকে এনে ভরদুপুরে বসিয়া রাখা হল। কখন পৈলান থেকে উদ্বোধন হবে। কেউ মৃদুস্বরেও প্রতিবাদ করতে পারলেন না। কারও মনে হল না, এটা ক্লাবের পক্ষে খুব একটা সম্মানজনক হবে না? মুখ্যমন্ত্রীকে বিনীতভাবে বলাও গেল না, আপনি নিজে একদিন ক্লাবে এসে উদ্বোধন করুন, দরকার হলে এক সপ্তাহ পরে উদ্বোধন হোক।
এতদিন হয়নি। এখন হয়েছে। তাই, ফ্লাড লাইটের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানানোই যায়। তাই বলে, ক্লাবের ন্যূনতম আত্মমর্যাদা থাকবে না? আই এফ এ সামান্য সূচি বদল করলে কত প্রতিবাদ দেখা যায়। রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রতিবাদের অন্ত নেই। কিন্তু পৈলান থেকে ইস্টবেঙ্গলের ফ্লাডলাইট উদ্বোধন হলে কোনও বিবৃতি কারও মুখ থেকে বেরোয় না। ক্লাবটা কাদের হাতে আছে, সমর্থকরা ভেবে নিন।