ফেসবুক টিপ্পনি নয়, মাঠে আসুন

কঠিন অঙ্কের সামনে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু যদি অঙ্কগুলো মিলে যায়!‌ যদি সত্যিই লাল হলুদের ঘরে আই লিগ আসে, মাঠে না যাওয়ার জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন তো?‌ ফল যাই হোক, সেদিন সবাই মাঠে আসুন। পাশে থাকুন। মাঠে না এলে ফেসবুকে জ্ঞান দেবেন না। লিখেছেন রাহুল বিশ্বাস।।

ইস্টবেঙ্গল কি আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে?‌ পয়েন্ট টেবিল বলছে, কাজটা বেশ কঠিন। অনেকগুলো জটিল অঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে। সোমবার লাজংয়ের বিরুদ্ধে যদি জিতত, সেক্ষেত্রে শীর্ষে চলে আসত। ট্রফি জয়ের দিকে একধাপ এগিয়েই যেত। অন্য কারও দিতে তাকাতেই হত না। নিজেরা জিতলেই চলত। কিন্তু এখন অঙ্ক বড়ই প্রতিকূল। শুধু নিজেদের জিতলেই হবে না। আরও দুটো কঠিন অঙ্ক মেলাতে হবে। ১)‌ গোকুলামের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের জেতা চলবে না। ২)‌ চার্চিলের বিরুদ্ধে মিনার্ভার জেতা চলবে না।

এই শর্তগুলোর কথা লাল হলুদ সমর্থকদের অজানা নয়। অনেকেই হয়ত হাল ছেড়ে দিয়েছেন। এমনকী দলের ফুটবলার, কোচেদের শরীরী ভাষাও কেমন যেন ম্রিয়মান। কিন্তু এমনটা কেন হবে?‌ অন্য দুই ম্যাচে কী হবে, তা হয়ত ইস্টবেঙ্গলের হাতে নেই। কিন্তু নিজেরা তো সর্বশক্তি দিয়ে জেতার জন্য ঝাঁপাতে পারে। আমাদের সমর্থকদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। আমরা ফেসবুকে নানা মন্তব্য লিখে নিজেদের সমর্থক বলে জাহির করি। কিন্তু কতজন নিয়মিত মাঠে যাই?‌ ক্রিকেটে যত ভারতপ্রেম, পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা হলে। বাকি সময় কতটুকু খোঁজ রাখি?‌ ফুটবলের ক্ষেত্রেও তাই। যত উন্মাদনা শুধু মোহনাবাগানের বিরুদ্ধে খেলা হলে। বাকি ম্যাচগুলোয় মাঠে যাওয়ার তাগিদ দেখা যায় না কেন?‌ ঘরের মাঠে ইস্টবেঙ্গল এতগুলো ম্যাচ খেলল। তেমন দর্শক হল না কেন?‌

east bengal

যা হয়েছে, তাকে নিয়ে বেশি চর্বিত চর্বন না করাই ভাল। যা হতে চলেছে, সেদিকে মন দেওয়া জরুরি। শেষ ম্যাচ তো ঘরের মাটিতেই। আমরা কি পারি না ঘরে বসে না থেকে মাঠ ভরিয়ে তুলতে?‌ সেদিন যদি ইস্টবেঙ্গল হেরেও যায়, আমরা তো মনে মনে এটুকু বলতে পারব, দলের সঙ্গে ছিলাম। আর যদি জিতে যাই, যদি বাকি অঙ্ক দুটোও মিলে যায়, তাহলে ভাবুন তো কেমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সেই ইতিহাস গড়ার দিনে মাঠে না থাকলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন তো?‌

ফেসবুকে ফুটবল সংক্রান্ত গ্রুপগুলোতে সারাক্ষণ আই লিগ নিয়ে চর্চা। দেখে একেক সময় ভালও লাগে। তবু ভাল, উন্মাদনাটা এখনও বেঁচে আছে। কিন্তু আমরা কি শুধু ঠাণ্ডা ঘরে মোবাইল হাতে নিয়ে এটা–‌ওটা মন্তব্য করেই নিজেদের দায়িত্ব পালন করব?‌ যাঁরা দূরদূরান্তে আছেন, তাঁদের কথা আলাদা। কিন্তু কলকাতা বা আশপাশে থেকে যাঁরা মাঠে আসবেন না, তাঁরা দয়া করে ফেসবুকে জ্ঞান দেবেন না। আসুন, সব ভুলে মাঠে আসি। শেষদিনটায় সবাই একসঙ্গে চিৎকার করি।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.