‌হ্যাঁ, তরুণ মজুমদারের ছবি এখনও আনন্দাশ্রু ডেকে আনে

এই ছবিতেও বেশ কয়েকটি রবীন্দ্র সঙ্গীত। ভারি চমৎকার তার ব্যবহার। কোনওটাই আরোপিত মনে হয় না। বেশ কয়েকটি গানে চোখের জল আপনাআপনিই গড়িয়ে যায়। অনেকটা আপন বেগে পাগল পারা হয়ে। ভালবাসার বাড়ি দেখে এসে লিখলেন কুন্তল আচার্য।।

এই ছিয়াশি বছর বয়সে ছবি করছেন তরুণ মজুমদার!‌ এই বয়সে কি এই সময়ের মানুষকে ছুঁতে পারবেন!‌ এই ছবি আদৌ তাঁর আগের ছবিগুলির মতো হবে তো!‌ কিছুটা সংশয় নিয়েই গিয়েছিলাম ভালবাসার বাড়ি দেখতে। না, হতাশ হইনি। বরং, একরাশ মুগ্ধতা নিয়েই ফিরে এলাম। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, এখনও তরুণ মজুমদারের ওপর স্বচ্ছন্দে ভরসা করা যায়।
তাঁর সব ছবিতেই যৌথ পরিবারের জয়গান। এই ছবিও ব্যতিক্রম নয়। এখানেও একসঙ্গে বেঁচে থাকার গান। পাশাপাশি প্রেম এসেছে নিজের নিয়মে। ঢাক ঢোল পিটিয়ে নয়, সে এসেছে নিঃশব্দে। টুকরো টুকরো ভাললাগার মুহূর্ত তৈরি করেছে অন্য এক আবহ। গ্ল্যামারাস ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকেও পাওয়া গেল একেবারে অন্য ভূমিকায়। তাঁর ভেতর যে একটা অভিনেত্রী সত্তা আছে, ঠিকঠাক চিত্রনাট্য পেলে তিনিও যে নিজেকে মেলে ধরতে পারেন, এই ছবি সেটা আরও একবার বুঝিয়ে দিয়ে গেল।

bhalobasar bari
তরুণ মজুমদারের ছবি মানে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুন্দর ব্যবহার। যে কারণে ‘‌চরণ ধরিতে দিও গো আমারে’‌ হয়ে ওঠে দাদার কীর্তির গান। যে কারণে ‘‌শ্রাবণের ধারার মতো’‌ হয়ে ওঠে ‘‌আলো’‌র গান। এই ছবিতেও বেশ কয়েকটি রবীন্দ্র সঙ্গীত এসেছে। কোনওটি ঋতুপর্ণার লিপে। আবার কোনওটি আবহে। প্রতিটি গানই বেশ প্রাসঙ্গিক। আরোপিত বলে মনে হল না। বেশ কয়েকটি গান এনে দিল কান্নার আবহ। এমনকী সামনের আসনে বসা মোবাইল খটখট করা মেয়েটিও একসময় দেখলাম চোখ মুছছে। হল যে ভর্তি হয়েছিল, এমন নয়। তবে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অধিকংশই চোখের জল ফেলেছেন। বড় তৃপ্তির সেই কান্না। যার জন্য সিরিয়াল মার্কা মেলোড্রামার আশ্রয় নিতে হয়নি।
ছবির কাহিনি লিখতে গেলে লেখার কলেবর অনেক বড় হয়ে যাবে। তবে ছোট ছোট এবং বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ তারিফ করার মতোই। আউটডোরে সুইজারল্যান্ড বা হুনুলুলু যেতে হয়নি। তথাকথিত আইটেম সঙ বা যৌন আবেদনের সাহায্য নিতে হয়নি। এসবের হাতছানি ছাড়াও তাহলে মানুষকে হলে টেনে আনা যায়!‌ হ্যাঁ, যায়। তরুণ মজুমদার পারেন। এই বয়সেও পারেন।
ছবিটা এখনও হলে চলছে। সুযোগ থাকলে দেখে নিন।

(‌যদি ভালবাসার বাড়ি দেখে থাকেন, আপনিও আপনার অনুভূতি মেলে ধরতে পারেন। অন্য কোনও ছবি সম্পর্কেও লিখতে পারেন। পাঠিয়ে দিন বেঙ্গল টাইমসের ঠিকানায়। )‌

bengaltimes.in@gmail.com

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.