সব্যসাচী তো ঠিকই বলেছেন

সব্যসাচী ওই ব্যবসায়ীকে চেনেন না?‌ একথা‌ কেউ বিশ্বাস করেন? তবে, একটি মোক্ষম সত্যি বলে ফেলেছেন মেয়রমশাই। মুখ্যমন্ত্রীকে জানালেও কিচ্ছু হবে না। সত্যিই হল না। হবেও না। আপাতত সব্যসাচীরা বহাল তবিয়তেই থাকবেন। অনুপ্রেরণা সত্যিই বড় সাঙ্ঘাতিক জিনিস। লিখেছেন রক্তিম মিত্র।।

 

একেবারে খাঁটি কথাই বলেছেন সব্যসাচী। যাকে খুশি বলুন, কিচ্ছু করতে পারবেন না। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীকে জানালেও কিছু হবে না।
সল্টলেকের ওই ব্যবসায়ীটি কে, তাঁর কীসের ব্যবসা, আগরতলার সঙ্গে তাঁর কীসের সম্পর্ক, এসব কোনওকিছুই জানি না। সেই ব্যবসায়ীকে কখনও চোখেও দেখিনি। এই কাণ্ডের আগে তাঁর নামও শুনিনি।

কিন্তু এটুকু বিশ্বাস করি, তিনি যা বলছেন, সত্যিই বলছেন। তাঁকে না চিনি, শ্রীমান সব্যসাচীকে তো চিনি। তিনি যে তোলা চাইতে পারেন, তোলা না পেলে হুমকি দিতে পারেন, এটুকু বিশ্বাস করি। জলে থেকে কুমীরের সঙ্গে বিবাদ করতে নেই, এই সহজ সত্যিটা ওই ব্যবসায়ী বিলক্ষণ বোঝেন। অল্প–‌স্বল্প টাকা দিয়ে মিটিয়ে নেওয়ার রাস্তাই এতদিন নিয়েছেন। কিন্তু চাহিদা বাড়তে বাড়তি গিয়ে কোটিতে ঠেকেছে। নিতান্ত নিরুপায় হয়েই তাঁকে প্রেস ক্লাব ভাড়া নিতে হয়েছে।

sabyasachi

এর ফল কী হতে পারে, তা কি তিনি জানেন না?‌ দিব্যি জানেন। তবু তাঁর সামনে হয়ত আর কোনও উপায় ছিল না। মনে আছে, নয়ের দশকের গোড়ার দিকে হর্ষদ মেহতা অভিযোগ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাওয়ের বিরুদ্ধে। গোটা দেশ তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল সেই অভিযোগ নিয়ে। সেখানে তবু নরসীমা রাওয়ের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ছিল না। আর এখানে মেয়রের নামে এমন গুরুতর অভিযোগ, অথচ আমরা এতটাই অভ্যস্থ যে, কোনও রেখাপাতই করছে না। যেন এমনটা তো হয়েই থাকে।

অনেকে বলেন, কী প্রমাণ আছে। একটা গোয়েন্দা গল্পে পড়েছিলাম, যখনই কেউ এমন প্রশ্ন করে, তখনই বুঝতে হবে, অপরাধের অর্ধেক প্রমাণ হয়ে গেল। কী প্রমাণ আছে–‌শব্দটা সবথেকে বেশিবার উচ্চারিত হয়েছে অপরাধীদের মুখেই। সব্যসাচীর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কী?‌ ওই ব্যবসায়ীকে চিনিই না। সব্যসাচী যে ডাঁহা মিথ্যে বলছেন, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে একটা মোক্ষম সত্যি বলে ফেলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে জানালেও কিছু হবে না।

সত্যিই তো। কিছুই তো হল না। উল্টে তাঁর পক্ষে সাফাই দিতে আসরে নেমে গেলেন ববি হাকিম। ‘‌অনুপ্রেরণা’‌ ছাড়া সম্ভব?‌ এবার কী কী হতে পারে?‌ সেই ব্যবসায়ীকে পুলিশ নানা ভাবে হেনস্থা করতে পারে। সেই ব্যবসায়ীর ওপর নানাভাবে আক্রমণ নেমে আসবে। অথচ, মেয়রের কিছুই হবে না। প্রশাসন তাঁকে আড়াল করবে, মন্ত্রীরা তাঁকে আড়াল করবেন, মুখ্যমন্ত্রীও তাঁকে আড়াল করবেন। ঠিক যেমন ভারতী ঘোষকে আড়াল করতেন।

সত্যিই, ‘‌অনুপ্রেরণা’‌ বড় সাঙ্ঘাতিক জিনিস।

web-banner-strip

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.