সুমিত চক্রবর্তী
একেবারে গায়ে গায়ে যেন দুটো উৎসব। বাঙালির প্রিয় সরস্বতী পুজো। আর সারা দেশের প্রিয় ২৬ জানুয়ারি। অনেকেই নানা আড়ম্বরের রাস্তা বেছে নেন। সরস্বতীর নামে যা যা হয়, স্বয়ং সরস্বতীও হয়ত আঁতকে উঠতেন। আবার দেশপ্রেমের নামেও যা যা হয়, সেসব দেখলে দেশপ্রেমিকরা বলতেন, কেন যে দেশটা স্বাধীন হল!
এসব চমক থেকে অনেক দূরে, একেবারে অন্য আঙ্গিকে নিজেদের মেলে ধরল ইস্ট দাদপুর নবজাগরণ সঙ্ঘ। এলাকার মানুষের কৃষ্টি–সংস্কৃতিকে মেলে ধরার কাজে অক্লান্ত এই সংস্থা। খেলাধূলা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিরাট জাঁকজমক না থাকলেও মন ছুঁয়ে যায়। সঙ্গে আরও এক মহৎ উদ্যোগ— রক্তদান। টানা পাঁচ বছর ধরে এই কাজটিও নিষ্ঠার সঙ্গেই করে চলেছে এই সংস্থা।
রক্তদান সম্পর্কে সবার মনেই কম–বেশি ভীতি কাজ করে। কী জানি, যদি পরে শরীর খারাপ হয়ে যায়! যদি সব রক্ত ফুরিয়ে যায়! কত কুসংস্কারও জড়িয়ে থাকে রক্তদানের সঙ্গে। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেইসব বাধা অতিক্রম করে এসেছে নবজাগরণ সঙ্ঘ। এখন রক্তদান যেন উৎসব। তরুণ–তরুণী থেকে গৃহবধূ, এমনকী বৃদ্ধরাও পিছিয়ে নেই। তাঁরাও এগিয়ে আসছেন রক্ত দিতে। এভাবেই সারাদিন ৪৮ জন রক্ত দিলেন। এই মহৎ উদ্যোগকে উৎসাহ দিতে এগিয়ে এসেছিল হাওড়ার সঞ্জীবন হাসপাতাল। তাদের ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা এসে সারাক্ষণ মানুষকে উৎসাহিত করে গেলেন। গ্রামীণ উদ্যোগ, সঙ্গে হাসপাতালের সহযোগিতা। সবমিলিয়ে অন্য একটা আবহ তৈরি হল। যা এই কঠিন সময়েও পাশে থাকার বার্তা দিয়ে গেল।
চারিদিকে আড়ম্বরের প্রতিযোগিতা। অকারণ অপচয়ের প্রতিযোগিতা। কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই অঙ্গিকার। সবাই যদি এমনভাবে ভাবতে পারত!