বড় ম্যাচে ‘‌অনুপ্রেরণা’ ছাড়াই ৬৩ হাজার!‌‌

সরল বিশ্বাস

১)‌ শহরের কোথাও বড় ম্যাচ নিয়ে পোস্টার বা হোর্ডিং দেখেছেন?‌ কলকাতাতেই যখন নেই, তখন জেলা শহরের কথা না হয় ছেড়ে দিন।
২)‌ মোহনবাগান–‌ইস্টবেঙ্গল উপলক্ষে কোনও সরকারি বিজ্ঞাপন দেখেছেন?‌
৩)‌ বিভিন্ন ক্লাবে টিকিট বিলি হচ্ছে, এমনটা হয়েছে কি?‌
৪)‌ স্কুল থেকে ছেলেদের কার্যত ধরে আনতে হয়েছে, যুব আবাসে রেখে খাইয়ে দাইয়ে ম্যাচ দেখাতে হয়েছে কি?‌
৫)‌ বিরাট পুলিশ বাহিনী ছিল না। কিন্তু বড় রকমের কোনও অশান্তি হয়েছে কি?‌
৬)‌ শহরের নানা প্রান্ত থেকে প্রচুর সরকারি বাস দেওয়ার কথা শুনেছেন?‌ কোনও বিজ্ঞপ্তি আপনার চোখে পড়েছে?‌
৭)‌ একদিন পরেই সরস্বতী পুজো। পাড়ায় পাড়ায় কত আলপনা। কিন্তু যুবভারতী চত্বরে ঢাউস কোনও আপলনা আপনার চোখে পড়েছে কি?‌
৮)‌ নেতা, মন্ত্রী, অভিনেতা, সেলিব্রিটিদের ঘটা করে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনতে হয়েছে?‌
৯)‌ যানবাহন যেমন চলার তেমনি চলেছে। এর জন্য গোটা সল্টলেক জুড়ে উচ্ছেদ করতে হয়নি। একটি দোকানও তুলে দিতে হয়নি। এক মাস ধরে নানা রাস্তা বন্ধ করে অঘোষিত কার্ফু জারি করতে হয়নি।
১০)‌ এত হাজার হাজার মানুষ। অথচ, খেলা দেখতে এসে টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছেন, এমন ঘটনা ঘটেছে কি?‌ যাঁরা দেখতে এসেছেন, দেখতে পেয়েছেন।

derby4
আসলে, এই ম্যাচের অন্য এক মহিমা। কোনও প্রচার লাগে না। বিজ্ঞাপন লাগে না। কেউ দুই যমজ শিশুকে নিয়ে হাজির হয়ে গেছেন শিলঙ থেকে (‌হ্যাঁ, মেঘালয়ের শিলঙ)‌। কেউ হাজির হয়েছেন সুদূর শিলিগুড়ি বা পুরুলিয়া থেকে। টিকিট বিক্রি নিয়ে সামান্য সমস্যা ছিল। কিন্তু টিকিট পাওয়া যায়নি, এমনটাও হয়নি। যাঁরা এসেছেন, সবাই টিকিট পেয়েছেন। ৬৩ হাজার মানুষ। তার জন্য যেটুকু নিরাপত্তার দরকার, ছিল। বাড়াবাড়ি করতে হয়নি। খারাপ কোনও ঘটনাও ঘটেনি। আসল কথা হল, যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা খেলাকে ভালবাসেন। সারা বছর ফুটবল–‌যাপন করেন। পাড়ার কাউন্সিলরের বিলি করা টিকিট নিয়ে খেলা দেখতে আসেননি।

সবচেয়ে বড় কথা, এমন ম্যাচ সফল করতে কারও ‘‌অনুপ্রেরণা’‌ দরকার হয়নি।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.