সোনার কেল্লার মুকুল ঘরে ফিরেছিল। যে কোনওদিন এই মুকুলও ঘরে ফিরতেই পারেন। তিনিও পতাকা নিয়ে বলবেন, ‘উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে’ সামিল হলাম। ছ বছর তো দূরের কথা, দু বছরের মধ্যেই এমনটা ঘটতে পারে। লিখেছেন সরল বিশ্বাস।।
কোন পথে পা বাড়াবেন মুকুল রায়? পুজোর মুখেও তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। যে পথেই পা বাড়ান, ভবিষ্যতে কোথাকার জল কোথায় গড়াবে, কে বলতে পারে! এতদিন তিন অন্যের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়েছেন। উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল করেছেন। এবার হয়ত তিনি নিজেও ফের কোনওদিন সামিল হতে পারেন। কী কী হতে পারে, একটু ভেবে নেওয়া যাক।
১) মুকুল বিজেপি তে গেলেন। তাহলে দিলীপ ঘোষ–রাহুল সিনহাদের কী হবে? কার নির্দেশে কে চলবেন?
২) মুকুল এলেন। সঙ্গীসাথীরা এলেন না। তাহলে মুকুলের গুরুত্ব আদৌ থাকবে তো ? তৃণমূলে ভাঙন ধরাতে পারলে কিছুটা হয়ত থাকবে। যদি তেমন কেউ না আসেন? তখন বিজেপিতে মুকুল নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বেন না তো?
৩) মুকুল বিজেপিতে এলেন। বিক্ষুব্ধ কিছু তৃণমূলের লোকজনও এলেন। তাঁদের বেশি গুরুত্ব দিলে আদি বিজেপি কর্মীরা ক্ষেপে যাবেন না তো? আদি বিজেপি, নব্য বিজেপি, তৎকাল বিজেপি হয়ে যাবে না তো?
৪) মমতা শর্ত দিলেন, রাজ্যসভায় বিভিন্ন বিলকে সমর্থন করব। কিন্তু মুকুলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া চলবে না। কী করবেন মোদি–অমিত শাহরা? অতীতে কিন্তু মমতা চাননি বলেই তপন শিকদারকে মন্ত্রী করা যায়নি। মমতা চাননি বলেই বিজেপি সুদীপকে মন্ত্রীসভায় আনতে পারেনি
৫) মুকুল আলাদা দল গড়লেন। কিন্তু তৃণমূলে তেমন ভাঙন ধরাতেই পারলেন না। তাহলে বিজেপি সেই আলাদা দলকে আদৌ গুরুত্ব দেবে তো? পঞ্চায়েতেই বিজেপি বনাম মুকুলের দলের রেশারেশি দেখা যাবে না তো?
৬) সিপিএম থেকে বেরিয়ে পিডিএস তৈরি করেছিলেন সঈফুদ্দিন–সমীর পুততুন্ডরা। তেমন ছাপ ফেলতেই পারেনি। মুকুলের দলেরও যদি তেমনই অবস্থা হয়, আবার মুকুল তৃণমূলে ফিরবেন না তো?
৭) ২০১৪ তেও মুকুলের মোহভঙ্গ হয়েছিল। অনেক জল্পনা ছড়িয়েছিল। কিন্তু ঘরের ছেলেকে সেই ঘরেই ফিরতে হয়েছিল। এবারও তেমনটা হবে না তো? ৬ বছর তো লম্বা সময়। কী জানি, হয়ত দু বছরেই আবার মুকুলবাবুর প্রত্যাবর্তন ঘটবে। সেদিন তাঁর হাতে কেউ একজন পতাকা তুলে দেবেন। আর এতদিন তিনি যেমন তোতাপাখির মতো লোকেদের শেখাতেন, তাঁকেও হয়ত সেই বুলি আওড়াতে হবে। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে যে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে, তাতে সামিল হলাম।
সোনার কেল্লার মুকুলের মতো এই মুকুলও হয়ত ঘরে ফিরে আসবেন। তার জন্য কোনও ফেলু মিত্তিরের দরকার হবে না।