বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি কে? উত্তরটা সবাই জানেন, প্রণব মুখার্জি। কিন্তু উত্তরটা হতেই পারত সোমনাথ চ্যাটার্জি। হ্যাঁ, দশ বছর আগে, এই বঙ্গ সন্তানের কাছেই এসেছিল রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রস্তাব। তাঁর খুব একটা আপত্তি ছিল, এমন নয়। কিন্তু রাজি হননি প্রকাশ কারাত। তাই সেই অধ্যায়টি সেখানেই সমাপ্ত হয়ে যায়।
সোমনাথবাবু তখন বোলপুরের সাংসদ। একইসঙ্গে লোকসভার স্পিকার। ইউপিএ ওয়ান সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বামেদের। সোনিয়া গান্ধী, মনমোহন সিংরা চেয়েছিলেন, ক্যাবিনেটে যেন বামেরাও থাকেন। কিন্তু সেবার সেই প্রস্তাবে রাজি হননি বাম নেতৃত্ব। তিন বছর পর, এপিজে আব্দুল কালামের মেয়াদ তখন শেষ হয়ে আসছে। কে হতে পারেন রাষ্ট্রপতি?
সোনিয়া গান্ধী চেয়েছিলেন, সোমনাথ চ্যাটার্জিকে। শরদ যাদব মারফত প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। ইউপিএ সরকারের শরিকরা সরাসরি এসে প্রস্তাব দিলেন সোমনাথবাবুকে। তাঁদের দাবি, সোনিয়া গান্ধীও নাকি এমনটাই চাইছেন। নীতীশ কুমার তখন এনডিএ শিবিরে। তিনিও চাইলেন, সোমনাথবাবুকেই প্রার্থী করা হোক। ইঙ্গিত এল, সোমনাথ চ্যাটার্জি প্রার্থী হলে বিজেপি প্রার্থী দেবে না (সোমনাথ চ্যাটার্জির বাবা একসময় জনসঙ্ঘের সাংসদ ছিলেন। সেই কারণেই হয়ত তাঁর নামে বিজেপি–র তেমন আপত্তি থাকত না)।
সোমনাথবাবু জানালেন, তিনি তো এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, দলই নেবে। সোমনাথবাবুর দাবি, প্রকাশ কারাতের কাছে এই মর্মে প্রস্তাব গিয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি তিনি খারিজ করে দেন। সেই সময়ে দলের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়নি। জ্যোতিবাবুর প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রস্তাব নিয়ে যেমন পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভোটাভুটি হয়েছিল, এক্ষেত্রে তেমন বিতর্ক বা ভোটাভুটি কোনওটাই হয়নি। প্রকাশ কারাত ‘না’ বলার পরেও নীতীশ কুমার সাত–আটবার ফোন করেছিলেন সোমনাথবাবুকে।
সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় নিজেও বিষয়টি নিয়ে তেমন সোচ্চার হননি। দলের সিদ্ধান্ত নিঃশব্দে মেনেই নিয়েছিলেন। রবিবার তাঁর এক সাক্ষাৎকারে তাঁর সেই কথা উঠে এল। নিচে লিঙ্ক শেয়ার করা হল। আগ্রহী পাঠকেরা সেই সাক্ষাৎকার পড়ে নিতে পারেন।