সুচিত্রার নামটা দিলে কি খুব ক্ষতি হয়ে যেত!‌

প্রাক্তন ও পোস্ত। দুই জনপ্রিয় ছবি। কিন্তু এই দুই ছবি নিয়ে উঠে এল নতুন বিতর্ক। দুটিই নাকি সুচিত্রা ভট্টাচার্যর লেখা। যা বেমালুম নিজেদের নামে চালিয়ে দিয়েছেন পরিচালক জুটি। এই নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন। লিখেছেন শ্রীপর্ণা গাঙ্গুলি।।

 

কাছের মানুষদের সম্পর্কে যখন খারাপ কিছু শুনি, তখন কষ্টটা হয়ত একটু বেশিই হয়। কাছের মানুষ মানে সবসময় যে আলাপ–‌পরিচয় থাকতেই হবে, এমন নয়। আলাপ নেই, এমন মানুষকেও তো কাছের মনে হয়।

praktan3তেমনই দুজন নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বাংলা ছবির সফল পরিচালক জুটি। একের পর এক অসাধারণ ছবি উপহার দিয়েছেন। একেবারে সাম্প্রতিক সংযোজন পোস্ত। বাংলা ছবিকে এঁরা নতুন করে প্রাণ দিয়েছেন। এই জুটির ইচ্ছে, অলীক সুখ দেখেছি। বেলাশেষে তো অসাধারণ। প্রাক্তনও বেশ ভাল লেগেছে। পোস্তকে ঘিরে যতখানি প্রত্যাশা ছিল, ততটা হয়ত পাইনি। তবে যেটা পেয়েছি, সেটাও কম নয়।
কিন্তু হঠাৎ শুনলাম, পোস্তর কাহিনী নাকি অন্য জায়গা থেকে নেওয়া। ইচ্ছে বা অলীক সুখ তো সুচিত্রা ভট্টাচার্যর লেখা। এতে কোনও আপত্তি থাকার কথা নয়। বরং, সাহিত্যধর্মী ছবি আরও বেশি করে হোক, আমরা তো সেটাই চাই। কিন্তু সেই সাহিত্যিককে প্রাপ্য কৃতিত্বটুকুও দেওয়া উচিত।

posto3
প্রাক্তন নাকি সুচিত্রা ভট্টাচার্যর উজান গল্প থেকে নেওয়া। আর পোস্ত নেওয়া হয়েছে মোহনবিল গল্প থেকে। দুটিই প্রায় চোদ্দ বছর আগে প্রকাশিত। যদি লেখা হত সুচিত্রা ভট্টাচার্যের কাহিনী অবলম্বনে, তাহলে আপত্তির কিছুই থাকত না। বরং সেটা অনেক ভাল দেখাত। কিন্তু ছবির টাইটেল কার্ডে কোথাও সুচিত্রা ভট্টাচার্যের নাম রাখা হয়নি। হয়ত কিছু রয়্যালটি লাগত। কিন্তু যে প্রযোজক এত কোটি টাকা খরচা করলেন, তাঁর কাছে সামান্য রয়্যালটি দেওয়া কি খুব কঠিন ছিল?‌ তার চেয়েও যেটা খারাপ লেগেছে, তা হল এই জুটি কাহিনী নিজেদের নামে চালিয়ে দিলেন। চিত্রনাট্যকার হিসেবে নিজেদের নাম রাখতেই পারতেন। কাহিনীকার হিসেবে নিজেদের নাম দেওয়া কি খুব জরুরি ছিল?‌

suchitra bhattacharya2
কেউ কেউ বলছেন চুরি। কেউ কেউ বলছেন টুকলি। না, আমার দুই প্রিয় পরিচালক সম্পর্কে এমন ভাবতে আমি রাজি নই। চুরি করে এমন অসাধারণ সিনেমা বানানো যায় না। কই, অন্যরা করে দেখিয়ে দিন তো। তবে, একটু সৌজন্য দেখাতেই পারতেন শিবপ্রসাদ–‌নন্দিতা। কৃতিত্ব নিতে গিয়ে নিজেদের কিছুটা যেন ছোট করে ফেললেন। এরপরেও আপনাদের ছবি দেখতে যাব। কিন্তু কোথাও একটা প্রশ্ন তুলে দিলেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.