কী দরকার ছিল যাওয়ার!‌

সৌম্য সিনহা

যে বুড়োটা মার খেল কাল ভর দুপুরে। পিঠে কাল সিটে দাগ নিয়ে হয়তো খোঁড়াতে খোঁড়াতে দু একজনের কাঁধে ভর দিয়ে রাত এগারোটায় মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে বাড়ি ফিরেছে । ছোলার ডাল দিয়ে দুটো রুটি চিবোতে পারবে কি না তা বেশ সন্দেহের !
রিটায়ার্ড করেছেন বছর তিনেক । বাড়িতে ছেলে, ছেলের বৌ, নাতি নাতনি। সুখের সংসার। আচ্ছা, ওই মানুষটি কাল কেন নবান্ন অভিযানে সামিল হয়েছিলেন ?
বেকার ছোকরাগুলো না হয় কাজ বাজ না পেয়ে, মেয়ে গুলো না হয় রাতে ভিতে নিরাপদ নয় বলে, সরকারি কর্মচারীগুলো না হয় প্রাপ্য বেতন ও মহার্ঘ্য ভাতা না পেয়ে, কৃষক না হয় ন্যায্য ফসলের দাম না পেয়ে, সাধারণ মানুষগুলো না হয় চিট ফান্ডের টাকা ফেরত না পেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রদর্শনের জন্য কাল গর্জে উঠেছিল রাজ পথে।
কিন্তু ওই বুড়ো -বুড়িগুলো কেন তবে গিয়েছিল ব্যারিকেড গুলো ভেঙে দিতে…? কাঁদানে গ্যাস আর জল কামানের সামনে কোন সাহসে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে গিয়েছিল ওরা ?

police3
কারণ তো একটা আছে বৈকি ! তাছাড়া এমনি এমনি কেউ যায় না কি !
কই আমি, আপনি, বিপুল কাকু, রমা বৌদি যাইনি তো আমরা । আমরা দুপুরে বাহুবলী দেখেছি কাল । আর ওই বুড়োগুলো লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্লোগান দিয়ে গেছেন। বাঁচার স্লোগান, জীবনের স্লোগান, অহংকারের স্লোগান। ভাতের জন্য, কাজের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, একটা সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য।
ব্যস্ আর কিচ্ছু নয়। ওই টুকুই দাবি ওদের।
ভাবুন একবার। লোক গুলো কি স্বার্থপর! বিকেলে নাতি নাতনিদের পার্কে না নিয়ে গিয়ে এই বুড়ো বয়সে পুলিশের মার খেয়ে বাড়ি ঢুকল। কী বলি বলুন তো এদের ?

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.