বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: অনেকদিন ধরেই লড়াই করছিলেন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে। ৭৫ বছর বয়সে এসে হার মানতে হল। বিদায় নিলেন শান্ত মিত্র। শান্ত মিত্র মানে নিছক প্রাক্তন ফুটবলার নন। খেলা ছাড়ার পর কখনও হয়েছেন কোচ, কখনও ম্যানেজার। স্টেট ব্যাঙ্কেও ছিলেন উচ্চপদস্থ অফিসার। ফুটবলের ওপর বইও লিখেছেন। নিয়মিত ম্যাচরিপোর্ট করেছেন। হয়েছিলেন কলকাতার শেরিফও। একসঙ্গে অনেক সত্ত্বা মিশে ছিল এই মানুষটির মধ্যে।
১৯৬৫ তে ইস্টবেঙ্গলে সই করেন শান্ত মিত্র। ছিলেন টানা আট বছর। বেশ গর্ব করেই বলতেন, আমি কিন্তু কখনও মোহনবাগানে যাইনি। ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম সাফল্য হিসেবে ধরা হয় ইরানের পাস ক্লাবের বিরুদ্ধে জয়। সেই জয়ে লাল হলুদের অধিনায়ক ছিলেন শান্ত। ছিলেন ভারতীয় দলেও। খেলা ছাড়ার পর ইস্টবেঙ্গলে যেমন কোচিং করিয়েছেন, তেমনি জাতীয় দলেও কোচিং করিয়েছেন। নেহরু কাপে তিনি ছিলেন মিলোভানের অন্যতম সহকারী। স্টিফেন কনস্টানটাইনের সময়ও তিনি ছিলেন টেকনিক্যাল ম্যানেজার।
সন্তোষ ট্রফিতেও একটি বিরল কৃতিত্ব আছে এই ফুটবলারের। অধিনায়ক হিসেবে বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। কোচ হিসেবেও বাংলাকে ট্রফি এনে দিয়েছেন। পিকে ব্যানার্জি ছাড়া বাংলায় আর কারও এই কৃতিত্ব নেই। বিশ্ব ফুটবল নিয়ে প্রতিনিয়ত পড়াশোনা করেছেন। এই বয়সেও রাত জেগে ম্যাচ দেখেছেন। বিশ্লেষণ করেছেন। পাঠকদের কাছে তাঁর বিশ্লেষণ ও স্মৃতিচারণ বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। ফুটবলের ওপর গবেষণাধর্মী বইও লিখেছেন। ২০০৯ সালে তাঁকে কলকাতার শেরিফ করা হয়। তারপরই আক্রান্ত হন দূরারোগ্য ক্যান্সারে। ফলে, শেরিফের দায়িত্ব থেকে মাঝপথে সরে দাঁড়াতে হয়। ইস্টবেঙ্গল দিয়েছিল ভারত গৌরব সম্মান। অসুস্থতা ও বয়সজনিত কারণে খুব একটা অনুষ্ঠানে যেতেন না। তবে খেলাধূলার সব খবরই রাখতেন। সবই স্মৃতি হয়ে থেকে গেল।