কৌস্তভ হালদার
আমি একজন ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। সক্রিয় সমর্থক বলতে যা বোঝায়, তাই। ক্লাব জিতলে আনন্দ পাই। ক্লাব হারলে কষ্টও পাই। তবে আমার বাকি বন্ধুদের সঙ্গে আমার কিছুটা তফাত আছে। আমি মোহনবাগান বিদ্বেষী নই। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে মোহনবাগানের খেলা হলে অবশ্যই ইস্টবেঙ্গলের জয় চাই। কিন্তু যেখানে ইস্টবেঙ্গল নেই, সেখানে মোহনবাগানের হার চাইতে হবে, ঠিক এমন সমর্থক নই। সেখানে আমি চাই মোহনবাগান জিতুক।
যেমন দু বছর আগের আই লিগে। সেবার ইস্টবেঙ্গলের সম্ভাবনা ছিল না। মন থেকেই চেয়েছিলাম, ট্রফি অন্তত বাংলায় আসুক। অর্থাৎ মোহনবাগান জিতুক। এক জন্য বন্ধুদের কাছে অনেক গালাগালও খেতে হয়েছে। কিন্তু আমি নিজের কাছে পরিষ্কার। এবারও তাই। আর ইস্টবেঙ্গলের আই লিগ পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। অন্যান্য লাল হলুদ সমর্থকদের মতো আমিও খুব হতাশ। কিন্তু বাস্তবটাকে তো মেনে নিতে হবে। আমরা পারিনি, কিন্তু মোহনবাগান আশা জিইয়ে রাখতে পেরেছে। আমাদের যখন সম্ভাবনা নেই, তখন মোহনবাগান জিতলে ক্ষতি কী? এতে আমাদের ক্লাবেরও মঙ্গল। মোহনবাগান জিতলে আমাদের কর্তাদের মধ্যেও সেই তাগিদটা আসবে। আমরাও নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নিতে পারব।
তাই আইজলের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের জয় চাই। জানি, অনেক বিদ্রুপ শুনতে হবে। তবু বলছি, মোহনবাগান জিতুক। এমনকী শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধেও জিতুক। আমারা মোহনবাগান–ইস্টবেঙ্গল করে লড়াই করছি। অথচ, দেশের ফুটবল মানচিত্র থেকে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছি। জুনিয়র বিশ্বকাপ দলে বাংলার কেউ নেই। এমনটা কি আমরা কখনও ভাবতে পেরেছিলাম? এরপরেও আমাদের কোনও হেলদোল নেই। মোহনবাগান জিতলে তো বাংলার সম্মানই বাড়বে। ফেড কাপে আবার আমরা নতুন করে ঝাঁপাব। সেখানে নিজেদের দলের হয়ে চিৎকার করব। আই লিগেও যেন দু নম্বরে থাকি, সেই চেষ্টা করব। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হওয়া যাবে না, এই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আসুন, মোহনবাগানের হয়েই চিৎকার করি। জানি, বেশি লোকের সমর্থন পাব না। তবু ডাক দিয়ে রাখলাম। ডাক শুনে কেউ না এলে! রবি ঠাকুরের ভাষাতেই বলি, একলা চলো রে।
(এটি ওপেন ফোরামের লেখা। এই বিষয়ে আপনিও লিখতে পারেন। আই লিগে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাকে সমর্থন করা উচিত? এই নিয়ে খোলামেলা মতামত জানান। ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)