ভিনদেশের চারণকবি, কতকিছু শিখিয়ে গেলেন!‌

বৃষ্টি চৌধুরি

যেমন তেমন পুরস্কার নয়। একেবারে নোবেল বলে কথা। অথচ, কোথাও কোনও ছবি নেই। সেলফি নেই। বব ডিলান বুঝিয়ে দিলেন, তিনি অনেকটাই আলাদা।
যেদিন তাঁর নাম নোবেলের জন্য ঘোষণা করা হল, কোথায় ছিলেন এই চারণকবি?‌ কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। কোনও বিবৃতি বা বার্তাও নেই। তিনি ছিলেন একেবারেই লোকচক্ষুর আড়ালে। কী জানি, খবর পেয়েছিলেন কিনা। তিনি আদৌ পুরস্কার নেবেন কিনা, তা নিয়েও ছিল মস্তবড় সংশয়। ভেবে দেখুন, একটা বঙ্গভূষণ পেতেও কত তোষামোদি করতে হয়। কত ভুলভাল মিছিলে হাঁটতে হয়। আর এই মানুষটা!‌ নোবেল পাওয়ার পরেও কী নির্বিকার!‌

bob dylanযেদিন পুরস্কার দেওয়ার কথা, জনিয়ে দিলেন তিনি আসতে পারবেন না, অন্য কাজ আছে। নোবেল নেওয়ার থেকে বড় কাজ?‌ কী এমন কাজ থাকতে পারে?‌ পরে জানা গেল, তাঁর নাকি গানের শো আছে। ভেবে দেখুন, গানের শো করবেন বলে নোবেলের জাঁকজমক অনুষ্ঠানকে পাত্তাই দিলেন না। পুরস্কার নিতেও এলেন না। হঠাৎ রবিবার জানা গেল, তিনি নাকি পুরস্কার নিয়েছেন, তবে একেবারেই চুপিচুপি। কোনও অনুষ্ঠান নয়। কোনও ক্যামেরা নয়। একটি ঘরের মধ্যে, শুধু সুইডিশ আকাদেমির কয়েকজন।
ভেবে দেখুন, এমন একটা অনুষ্ঠান, যার কোনও ছবি নেই। টিভি চ্যানেল দেখাতে পারছে না। এজেন্সি পাঠাতে পারছে না। সবাই পুরনো ছবিই ছাপছে। সামান্য একটা পাড়ায় মঞ্চে উঠলে আমরা সেই ছবি কত গ্রুপে ছড়িয়ে দিই। লাইকের অপেক্ষা করি। কে কী কমেন্ট করল, সেদিকে সারাদিন চোখ রাখি। দেখুন ডিলানকে। বিশ্বের সর্বোচ্চ পুরস্কারের পরেও কী উদাসীন!‌ নোবেল নিচ্ছেন, এমন ছবি তাঁর ড্রয়িংরুমেও থাকবে না।
ভিন দেশের এক চারণ কবি। কত কিছু শিখিয়ে দিয়ে গেলেন!‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.