ইস্টবেঙ্গল নাকি আই এস এল খেলবে। একগুচ্ছ শর্ত পাঠিয়েছে রিলায়েন্স। তার মধ্যে একটা হল, লাল হলুদ রঙ বদলাতে হবে। জার্সি হবে অন্য রঙের। মনে পড়ে গেল ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। তিনি যদি থাকতেন, এই আজগুবি প্রস্তাবকে কীভাবে দেখতেন। হয়ে গেল একটা কাল্পনিক সাক্ষাৎকার। নিজেই প্রশ্ন করলেন। ভানুর জাবনিতে নিজেই উত্তর খুঁজলেন কুণাল দাশগুপ্ত।।
আপনি শুনেছেন রিলায়েন্স গোষ্ঠী ইস্টবেঙ্গলকে কী কী শর্ত দিয়েছে?
ভানু: না ভাই, শুনি নাই। কার কথা শুনুম? পরিচালক না রিলায়েন্স ? হাতে অখন অনেক ছবি, সময় কই?
প্রশ্ন: আরে দাদা, ওরাই তো এখন ভারতীয় ফুটবলকে নিয়মন্ত্রণ করছে।
ভানু: তাই নাকি? বুঝসি, ওরা হইল সূর্য। আর কেলাবগুলো ওদের ঘির্যা পাক খাইত্যাসে, আর খাইত্যাসে। সূর্য তো আলো দেয়। আর এরা সব আলো কাইর্যা কুইর্যা নিতে চায়।
প্রশ্ন: নীতা আম্বানিই তো নাকি শেষ কথা।
ভানু: জোরে কও। বয়স হইসে। শুনতে পাই না। কী আমদানি করসে, আম না জাম?
প্রশ্ন: দাদা আমদানি নয়। ওনার নাম নীতা, পদবী আম্বানি।
ভানু: তাতে হইলটা কী? হবলেরই নাম আর পদবী থাকে। আমার, আপনার সবারই। ওরা শর্ত দিবে কেন? শর্ত তো ফিফা, ফেডারেশন, আই এফ এ দিবে।
প্রশ্ন: ওরা যে টাকা ঢালছে।
ভানু: তাই বইল্যা শর্ত দিবে? আমারে প্রোডিউসার টাকা দেন। অখন ওনারা যদি আমারে উত্তম কুমারের রোল কইরত্যা দ্যায়, আমি করুম? ভাবেন তো শাপমোসন বা সপ্তপদীতে উত্তম কুমারের বদলে আমি! কেমন হইব? তা কী কী শর্ত দিসে?
প্রশ্ন: আই এল এস খেলতে হলে ইস্টবেঙ্গলকে লাল হলুদ জার্সি ছাড়াই খেলতে হতে পারে।
ভানু: ও বুসছি। ও গো দোষ নাই। মৌসম ভবন কইসে, এই বার গরম বেশি পড়সে, আরও পড়বে। তাই কোনওদিন যদি শোনেন ওরা জাতীয় সঙ্গীত জনগণ–র বদলে ‘চাহে কই মুঝে জঙলি কহে’ করতে সায়, বা জাতীয় পতাকার রঙ বদলাইয়া দিতে সায়, তাতে দোষের নাই। মস্তিষ্কে বিশেষ ধরণের পোকা আমদানি হইসে।
প্রশ্ন: ইস্টবেঙ্গল নীল, সাদা , কমলা জার্সি পরবে?
ভানু: ওগো দোষ দিও না ভাই। ফুটবলে ওরা শিশু। হামাগুড়ি দিত্যাসে। আর আমাগো কেলাবে ঐতিহ্য বলতে গ্যালে অনেক ল্যাখাপড়া দরকার। ওরা জানে না, অন্ন বস্ত্র ছাদহীন মানুষের লড়াই সংগ্রামের কথা। ওই কেলাবটা সিল বইল্যাই তো কোটি কোটি সহায় সম্বলহীন মানুষ বাঁইচ্যা থাকুমের লড়াই করস্যা। আম্বানিগো ইতিহাস পড়নের সময় দিতে লাগবে। যদি শোনে, ঠিক আছে। না শুনলে আমাগো সমর্থকদের জানো তো। এমন তাড়া দিবে, জমালয়ে পাঠাইয়া দিবে। মাইরা ধইরা নয়, এক্কেবারে জীবন্ত। সেই যমালয়ের জীবন্ত মানুষ যারে কয়।
প্রশ্ন: তাহলে ক্লাব ওই শর্ত মানবে না?
ভানু: আমাগো কর্তাদের অভিজ্ঞতা ওগো সাইতে অনেক বেশি। অগো উচিত ইখানে আইস্যা কর্তাদের কাছে ফুটবলের কেলাস করা। তবে আমি কেলাবেরে একটা অনুরোধ করি। এ দ্যাশের ফুটবলের আধুনিক মাথাদের মাথার চিকিৎসা যেন নিখরচায় কইর্যা দ্যায়। আমাগো কেলাব ডাক্তারদের কেলাব কিনা। মনে রাখবা, দ্যাশ ছাড়সি, প্রাণ ছাড়ুম, কিন্তু মইর্যা গেলেও কেলাব ছাড়ুম না।