রাহুল বিশ্বাস
এমন একটা দিনেই সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন শচীন তেন্ডুলকার। তাঁর ঝুলিতে ততদিনে অনেক রেকর্ডই এসে গিয়েছে। শুধু একটাই আক্ষেপ, বিশ্বকাপটা নেই। চার বছর আগে, ২০০৩ এ ঠোঁট আর চায়ের কাপের মধ্যে সামান্য ফাঁকটা থেকে গিয়েছিল। যেখানেই যেতেন, এই একটা প্রশ্নই যেন তাড়া করত। এই একটা আক্ষেপই যেন ঝরে পড়ত। ধরেই নিয়েছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতেই হয়ত শেষ বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন। সেই বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডেই বিদায়! গোটা দেশে কী প্রতিক্রিয়া হবে, বুঝতে অসুবিধা হয়নি মাস্টার ব্লাস্টারের। ঠিক করেই নিয়েছিলেন, অনেক হয়েছে, আর নয়, এবার বিদায় জানাবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে।
ঠিক তখনই একটা ফোন আসে শচীন তেন্ডুলকারের কাছে। কথা হল প্রায় চল্লিশ মিনিট। ফোনের অন্যপ্রান্তে তখন ভিভ রিচার্ডস। তিনি হয়ত কারও কাছে শুনেছিলেন, শচীন অবসর নিতে চলেছেন। শুরুতেই রিচার্ডস জানিয়ে দিলেন, ‘তুমি কোনওমতেই অবসর নেবে না। তোমার মধ্যে এখনও অনেক ক্রিকেট আছে।’ ভিভ তাঁকে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝিয়েছিলেন, জীবনে চড়াই–উতরাই আসে। ফর্ম দিয়েই এই খারাপ সময়কে অতিক্রম করতে হয়। মনের জোর আর নিষ্ঠা থাকলে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।’
ওই একটা ফোনই বদলে দেয় শচীনের চিন্তাভাবনা। ঠিক করে নিলেন, আবার নতুন করে লড়াই শুরু করবেন। ঠিক করেই নিলেন, ২০১১–র বিশ্বকাপেও খেলবেন। তার জন্য নিজেকে ডুবিয়ে দিলেন কঠোর অনুশীলনে। তারপর কী হয়েছিল, সে তো ইতিহাস। সতীর্থদের কাঁধে চেপে জাতীয় পতাকা হাতে ঘুরেছিলেন শচীন। যে আক্ষেপটা সারাজীবন ধরে বয়ে বেড়িয়েছেন, সেই আক্ষেপটা মিটেছিল ২০১১–র ২ মার্চ। শচীনের জীবনে এমন স্মরণীয় মুহূর্ত আর কবে এসেছে! এই দিনটা আসতই না যদি দশ বছর আগের ২৩ মার্চ ভিভ রিচার্ডসের ফোনটা না আসত।