বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদনঃ সে প্রায় আট বছর আগের কথা। নতুন অ্যালবামে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল এক শিল্পীর। অ্যালবামের নাম ছিল- রাখালিয়া বাঁশি। নানা আঙ্গিকের আধুনিক গানের সম্ভার। নামের মধ্যেই কোথাও একটা ছিল শচীনকর্তার ছোঁয়া। সেই ‘ডাকাতিয়া বাঁশি’র কথাই যেন মনে করিয়ে দিয়েছিল ‘রাখালিয়া বাঁশি’।
সেই যাত্রা শুরু সোনালী রায়ের। অবশ্য প্রদীপ জ্বালানোর আগে সলতে পাকানোর একটা প্রক্রিয়া থাকে। সোনালীর ক্ষেত্রেও তা ছিল। হঠাৎ একটা অ্যালবাম থেকে শিল্পীর জন্ম হল, এমন সরলীকরণ না করাই ভাল। ছিল শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের দীর্ঘ তালিম। বিমান মুখোপাধ্যায় থেকে হৈমন্তী শুক্লা। শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় থেকে অশোক ভদ্র। যাঁর কাছে যেটুকু শেখার, নিজের কণ্ঠে তুলে নিয়েছেন সোনালী।
একসময় অধ্যাপনাও করতেন। কিন্তু গানের পেছেনে সেভাবে সময় দিতে পারছিলেন না। তাই ছাড়তে হল অধ্যাপনা। গান নিয়েই মগ্ন থাকলেন। গানে মিশে রইল শিক্ষা, আর পরিশীলিত রুচিবোধ। তাঁর হোয়াটস আপ স্ট্যাটাসে দেখতে পাবেন- ‘সাধনা বিনা গান হয় না/ পায় না মানী কোন মান’। হ্যাঁ, হৈমন্তী শুক্লার সেই ‘গানই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা’। জীবনে নানা ঘাত-প্রতিঘাত এসেছে। কিন্তু গানকে কখনও ফাঁকি দেননি। বরং নিজেকে আরও নিমগ্ন করেছেন গানের ঝর্নাতলায়।
পরের অ্যালবাম রবীন্দ্রসঙ্গীত। তারপরের অ্যালবামে আবার আধুনিক। ‘সকালের রবীন্দ্রনাথ’ অনুষ্ঠানের সেই জনপ্রিয় শিল্পী টিভির পর্দায় পরিচিত মুখ। এফ এম থেকে ইউ টিউব- চাইলেই শোনা যায় তাঁর গান।
নিজেকে ভেঙেছেন, গড়েছেন, আরও পরিমার্জিত করেছেন। গানের আঙিনায় এনেছেন নানা বৈচিত্র্য। ২ অক্টোবর তাঁর একক অনুষ্ঠান। পুরোটাই শচীন কর্তাকে নিয়ে। জন্মদিনে শচীন কর্তাকে নিয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে কলামন্দিরে। সেখানে অনেক শিল্পীর সমন্বয়। আর সোনালীর একক অনুষ্ঠান আই সি সি আরে, শুক্রবার বিকেল পাঁচটায়। সঙ্গীত পরিচালনা ও পরিকল্পনায় দেবজিৎ রায়। উপস্থাপনায় থাকবেন দেবাশিস বসু। অনুষ্ঠানের নামটিও চমৎকার- শচীন সুরে সোনালী।
মিলি থেকে অভিমান, ভাটিয়ালি থেকে আধুনিক, কত রাগের ঘাটে ঘাটে হেঁটে বেড়াবেন সোনালী। একজনেরই সুর, একজনেরই কণ্ঠ, তবু কত বৈচিত্র্য। সেই বৈচিত্র্যের স্বাদ নিতে না হয় কিছু সময় অপেক্ষা করুক শহর কলকাতা। রাত পোহালেই পুরভোট। আর ভোট মানেই হিংসা, হানাহানি। তার মাঝে এই শহরকে দু-দন্ড শান্তি আর স্নিগ্ধতা এনে দিক সোনালীর কণ্ঠ।