বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদনঃ দিন কয়েক আগেও সকাল হলেই হাঁটতে বেরিয়ে পড়তেন অনেকে। যাঁরা সকালে উঠতে পারেন না, তাঁরা হাঁটতেন সন্ধেবেলায়। মাত্র কয়েকদিনে বাঁকুড়া শহরের রাস্তা-ঘাট যেন শুনশান।
না, ঠান্ডার জন্য নয়, গোটা শহরজুড় এক অদ্ভুত আতঙ্ক। নিজের নিয়মেই ছড়াচ্ছে গুজবের ডালপালা। রাস্তায় হাঁটতে বেরোলেই নাকি পিঠে চাবুক খেতে হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় চলছে এই অতর্কিতে আক্রমণ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ভোরের দিকে একটি ছেলে বাইক নিয়ে যাচ্ছে, পেছনে বসে থাকছে এক মহিলা। সেই মহিলার হাতে হয় সাইকেলের চেন, নয়তো লাঠি। যাওয়ার পথে পেছন দিক থেকে কারও পিঠে লাঠির বাড়ি মেরে নিমেশে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে ওই বাইক। প্রথমে শুরু হয়েছিল পুয়াবাগান, রাজগ্রাম এলাকায়। গত কয়েকদিনে নাকি বিভিন্ন রাস্তাতেই আক্রান্ত হচ্ছেন পথচারিরা।
শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশ পোস্টিং করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও রোজ নাকি কেউ না কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু হঠাৎ এভাবে পেছন থেকে হামলা কেন ? কী উদ্দেশ্য, তা পরিষ্কার নয় পুলিশের কাছেও। পথচারীদের কাছে যে ছিনতাই হচ্ছে, এমন নয়। পিঠে বাড়ি মেরেই হাওয়া হয়ে যাচ্ছে বাইকটি। ভয়ে বাইকের আওয়াজ শুনলেই লোকজন আগে থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে। পাছে, পিঠে লাঠির বাড়ি পড়ে।
সকালে শুরু হয়েছিল। ইদানীং নাকি সন্ধের দিকেও অনেকে লাঠির বাড়ি খাচ্ছেন। ভয়ে সন্ধেবেলাতেও বাজারে বেরোনো বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে যাঁদের বাড়ি একটু গলির দিকে, তাঁরা রীতিমতো আতঙ্কে আছেন। বাইক দেখলেই সন্দেহ করছেন এলাকার মানুষ। পেছনে মহিলা বসে থাকলে সেই সন্দেহ আরও বাড়ছে। কোনদিন নীরিহ বিক আরোহীদেরও হয়ত পাল্টা পিটুনি দেওয়া হতে পারে।
পুলিশের দাবি, কেউ কেউ নিছক মজা করার জন্যই এমনটা করছে। ভয়ে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে, এতেই ওদের আনন্দ। প্রায় দুই দশক আগে কলকাতায় স্টোন ম্যানকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। এবার এই আতঙ্ক বাইককে ঘিরে। পুলিশের অনুমান, দ্রুত রহস্যের কিনারা হয়ে যাবে।