বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদনঃ খবরটা ছড়িয়ে পড়ল রাত নটা নাগাদ।প্রথমে একটি চ্যানেলের ব্রেকিং নিউজ। দেড় মিনিটের মাথায় ছড়িয়ে গেল চ্যানেল থেকে চ্যানেলে।
এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত। তিনি অসুস্থ, সবাই জানতেন।অবস্থা স্থিতিশীল, অনেকটা ভাল আছেন, এই বার্তাও ছড়িয়ে গিয়েছিল। একটাই জল্পনা ছিল, কবে আবার বাড়ি ফিরবেন। কোথাও কোথাও অবশ্য জল্পনা চলছিল, তিনি বাড়ি ফিরলেও বোর্ডের কাজকর্মে কতটা সক্রিয় থাকতে পারবেন। বোর্ডের বার্ষিক সভায় কি তাঁকে পেট্রন ইন চিফ করে অন্য কাউকে সভাপতি করা হবে? এসব জল্পনা একটু একটু করে দানা বাঁধছিল। সবাইকে থামিয়ে বিদায় নিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বাণিজ্যের রূপকার।
জগমোহন ডালমিয়া। ক্রিকেট যতদিন থাকবে, এই নামটাও থেকে যাবে। মাঠের মধ্যে একের পর এক কীর্তি স্থাপন করে গেছেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু মাঠের বাইরেও একটা লড়াই থাকে। সেখানে ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা অঙ্গিকার থাকে। সৌরভের কামব্যাক যতটা গৌরবজনক, বোর্ডের শীর্ষে ডালমিয়ার ফিরে আসাও বোধ হয় তার কাছাকাছি।চারপাশের চেনা মানুষেরা একের পর এক সরে গেছেন, তাঁকে বহিস্কারের সিদ্ধান্তে পড়ে গেছে সর্বসম্মতির সিলমোহর। সেখান থেকেও মাথা ঠান্ডা রেখে নিজের লড়াই চালিয়ে গেছেন। ভারতীয় ক্রিকেট যখন আবার বিপর্যয়ের চোরাবালিতে, আবার আলিপুর রোডের সেই মানুষটাকেই ডেকে আনতে হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী, মমতা ব্যানার্জি থেকে শারদ পাওয়ার একের পর এক শোকবার্তা এসেই চলেছে।সৌরভ তো সকাল থেকেই ছিলেন হাসপাতালে। দুপুরে একবার দু ঘণ্টার জন্য বাড়ি গিয়ে আবার ফিরে এসেছিলেন হাসপাতালে? খবরটা ছড়িয়ে পড়তেই মুখ্যমন্ত্রী থেকে মেয়র, খেলার মাঠের লোক থেকে বাণিজ্য জগতের লোক, সবাই হাজির হয়ে গেলেন হাসপাতালে। মুখ্যমন্ত্রী বেরিয়এ যাওয়ার পর এসে গেলেন মুকুল রায়ও। একের পর এক টুইট, এসেই চলেছে। শ্রদ্ধা, স্মৃতিচারণ অবিরাম।
কীভাবে এমনটা ঘটে গেল ? ডাক্তারি ব্যাখ্যা কী ? কাল কখন আনা হবে সি এ বি তে? শোনা গেল, রাতেই দেহ নিয়ে যাওয়া হবে আলিপুরের বাড়িতে। সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ আনা হবে সি এ বি তে বিকেলে শেষকৃত্য হওয়ার কথা কেওড়াতলায়।
সময় গড়িয়ে যাবে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসবে শোকবার্তা। সাত সকালে এসে যাবেন বোর্ডকর্তারা। শোক আর স্মৃতিতে আচ্ছন্ন হয়ে থাকবে মহানগর।