রাহুল মিত্র
আজ সল্টলেকের তিনটি বুথে পুনরায় ভোট হল। সব বিরোধীরা এই ভোট বয়কট করলেন। কেন এই বয়কট, তা কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না।
কোনও সন্দেহ নেই, তিন তারিখে ভোটের নামে যা হয়েছে, তা চূড়ান্ত প্রহসন। কিন্তু আপনাদের প্রতিরোধ করার ন্যূনতম শক্তিটুকুও ছিল না। এটাও স্বীকার করুন। গৌতম দেব হুঙ্কার দিয়েছিলেন, তিনি চার হাজার স্বেচ্ছাসেবক নামাবেন। যে সব বাইক আসবে, বাগজোলা-কেষ্টপুর খালে তা ফেলার ব্যবস্থা করবেন। দেখা গেল, হুঙ্কারই সার। একটি বাইকও ফেলতে পারলেন না। গড়া হল সিটিজেন্স ফোরাম। অথচ,অরুণাভ ঘোষ ছাড়া বাকি সদস্যদের তেমন কোনও ভূমিকাই দেখা গেল না। হয়ত তাঁরা সন্ত্রাস আটকাতে পারতেন না। কিন্তু ভোটের আগের দিন সবাই বিধান নগর কমিশনারেটে তো যেতে পারতেন। নির্বাচন কমিশনে তো যেতে পারতেন। এত জায়গায় হামলা। দল বেঁধে দু-তিনটে জায়গায় তো যেতে পারতেন।
কী আশা করেছিলেন ? আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এসে সব বুথে পুনরায় ভোট করাবেন ? যা হওয়ার ছিল, সেটাই হয়েছে। আমার মনে হয়, এই চ্যালেঞ্জটাই নেওয়া উচিত ছিল। এই ভোটে বাইরের লোক আসত না। মিডিয়া অনেক বেশি সক্রিয় থাকত। প্রশাসনকে সতর্ক থাকতেই হত। নির্বাচন কমিশনকেও সক্রিয় থাকতেই হত। এই সুযোগটা কেন নেওয়া গেল না?
মানছি, এই নটা বুথের ফল থেকে বিধান নগরের ফল উল্টে যেত না। কিন্তু এই নটা বুথে যদি তৃণমূল পিছিয়ে থাকত, অন্তত এটুকু তো বোঝা যেত, বাকি বুথগুলোতে কী হয়েছে। তখন সন্ত্রাসের তত্ত্বটা কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হত। এমনিতেই এই মুহূর্তে তৃণমূলের প্রতি মানুষের সমর্থন কমছে। এক সপ্তাহ আগেও যাঁরা তৃণমূলের হয়ে গলা ফাটাতেন, এখন তাঁরাও শাসক দলের সমালোচনায় সোচ্চার। ভোট হলে তাঁদের ভোট তৃণমূলে পড়ত না।
বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বলাই যেত, এবার অন্তত ভোট দিন। যাকে খুশি দিন। শাসকের প্রতি যদি কোনও রাগ বা ঘৃণা থাকে, তা অন্তত প্রকাশ করুন। ওই নটি বুথে যদি জয় আসত, সেটাকে অন্তত নৈতিক জয় বলে প্রচার করতে পারতেন। এবং সেই প্রচার অনেকটা বিশ্বাসযোগ্যও হত।
তবু কারা কী ভেবে যে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন! এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নই। এই দ্বিমতটা বেঙ্গল টাইমসের মাধ্যমে তুলে ধরলাম।