ময়ূখ নষ্কর
বরাহ অবতারে ভগবান বিষ্ণুর সাথে মিলন হয়েছিল দেবী ধরিত্রীর। মাধবের স্ত্রী, তাই দেবীর অপর নাম মাধবী।
বাংলা অভিধান খুলে দেখছি, মাধবী অর্থে মধু হইতে প্রস্তুত মদ্যও বুঝায়। মাধবী অর্থে পৃথিবীই বুঝ, অথবা মদ্যই বুঝ, রসিক ব্যক্তি বলেন, উভয়েই নিদারুণ নেশার বস্তু। দেবী মাধবী যাকে নিজের ধুলি পথে আহ্বান জানান, সে দিব্যজ্ঞান লাভ করে। আর দেবী যার জঠরে প্রবেশ করেন, সে দিব্যদৃষ্টি লাভ করে।
আর এই দুইয়ের সমন্বয় যার মধ্যে ঘটে অর্থাৎ মাধবীর পথে চলতে চলতে যিনি মাধবী পান করেন তিনি অসামান্য পুরুষ, (এই সমন্বয়ের প্রভাবে আমার এক বন্ধু, বকখালির আকাশে অরোরা বোলিয়ারিস মানে মেরুজ্যোতি দেখতে পেয়েছিল ), শুধু সহযাত্রীদের পক্ষে তিনি বা তাঁরা মূর্তিমান গলগ্রহ, বিপদের কারণ। দাঁতাল হাতি এবং মাতাল সাথী- এই দুইয়েরই মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে, এবং আমার দৃঢ় বিশ্বাস প্রথমটির থেকে দ্বিতীয়টি শতগুণে বিপজ্জনক। প্রথমটির কবল থেকে পলায়নের চেষ্টা করা যায়, সেই চেষ্টায় সফলও হওয়া যায়। কিন্তু দ্বিতীয়টি!!!!!!
কোনও এক ১৫ আগস্ট এইরকম একদল দ্বিতীয়র পাল্লায় পড়েছিলাম। গিয়েছিলাম ফ্রেজারগঞ্জে। বেশ কয়েক বছর আগের কথা, তখন এমন পাড়ায় পাড়ায় ট্রাভেল এজেন্সি গজিয়ে ওঠেনি, বেড়াতে যাবার জন্য হুত করে গাড়িও পাওয়া যেত না। কিন্তু উৎসাহের চোটে আমরা একটা গাড়ি জোগাড় করেছিলাম। গাড়িটা বেশ বড়ো, আর দলে ছিলাম মাত্র ছ’জন। কিন্তু টালিগঞ্জ করুণাময়ী ব্রিজের কাছে গাড়িতে উঠতে গিয়ে দেখি পা রাখার জায়গা নেই। গাড়ি ভরতি শুধু বোতল আর বোতল। বন্ধুদের প্রতি বিশ্বস্ততার খাতিরে, গাড়িতে যারা ছিল তাদের আসল নাম বলছি না, যেতে যেতে কী কী কান্ড হয়েছিল তাও বলছি না। (সোমক প্রাণীটি আমার মতই বেরসিক বলে শুধু তার নাম প্রকাশ করছি)। বরং এই ফাঁকে ফ্রেজারগঞ্জ সম্বন্ধে কিছু কথা বলে নিই।
যে কোনও পর্যটনকেন্দ্রকে কেন্দ্র করেই আধা সত্য, আধা মিথ্যা মেশানো কিছু গল্প চালু থাকে। ফ্রেজারগঞ্জও এর ব্যতিক্রম নয়। এই গল্পের নায়কের নাম স্যার অ্যানড্রূ ফ্রেজার। লর্ড কার্জন যখন বাংলাকে ভাগ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন, তখন তিনি বাঙলার ছোটলাট ছিলেন। অত্যাচারি হিসাবে ফ্রেজারের বেশ বদনাম ছিল। বিপ্লবীরা বারদুয়েক তাঁকে হত্যা করার চেষ্টাও করেছিলেন। তাঁর নামেই
‘দোখনো‘ দেশের একটি গ্রামের এমন সাহেবি নামকরণ হয়েছে। কেমন করে?
একবার এই জলপথ দিয়ে কলকাতায় যাবার সময় ফ্রেজার সাহেবের জাহাজ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। অর্ধমৃত অবস্থায় ভাসতে ভাসতে সাহেব এসে পৌঁছান এই গ্রামে। তখন এক গ্রাম্য কিশোরী সাহেবের প্রাণ রক্ষা করে। তারপর যা হয়— পরিবার, জাত্যাভিমান, লাটসাহেবি সব ভুলে ফ্রেজারবাবু এই বাদাবনের দেশেই ডেরা বাধলেন। বঙ্গোপসাগরের জল থেকে বাঁচলেও প্রেমের সাগরে তলিয়ে গেলেন তিনি।
এমন রসালো খবর নিয়ে কলকাতার ইংরেজ মহলে ঢি ঢি পড়তে দেরি হল না। যথাসময়ে ফ্রেজারগিন্নির কানেও খবর গিয়ে পৌঁছাল। দেখা গেল অত্যাচারি হিসাবে তিনি ফ্রেজারের যোগ্য সহধর্মিণী। স্বামীর প্রেম ঘোচানোর জন্য সেই খাণ্ডারনি মহিলা কী করলেন কে জানে। কেউ বলে খুন, কেউ বলে অপহরণ, মোট কথা সেই বাঙালি মেয়েটা একদিন কর্পূরের মতো উবে গেলো। রয়ে গেলো শুধু ফ্রেজারগঞ্জ নাম আর সমুদ্রের তীরে সাহেবের প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ। ওফ কি রোম্যান্টিক জায়গা মাইরি। সমুদ্র, অবৈধ প্রেম, গুপ্তহত্যা সব আছে। যেতে যেতে সন্ধ্যা হয়ে গেছিল। ঠিক হল পরদিন ভোরেই বেরনো হবে সেই প্রাসাদের খোঁজে। শাম্ব বলল, “দাদা, আমাকে একটা দোখনো মেয়ে খুজে দিতে হবে। আমি ফ্রেজার সাহেব হব।” এই বলেই সবাই বোতল খুলে বসে পড়ল। পরদিন আমি আর সোমক ঘুম থেকে উঠে দেখলাম বাকিদের তখনও গতরাতের খোঁয়ারি কাটেনি। অগত্যা আমরা দুজনেই বেরোলাম।
দিনটা ছিল মেঘলা। হু হু হাওয়ায় বেশ কাপুনি লাগছে। মেঘের কম্বল মুড়ি দিয়ে সমুদ্রটাও চুপ মেরে আছে। ফ্রেজারগঞ্জ এক আজব জায়গা। দেশজুড়ে বালুকাবেলা অনেক দেখেছি, কিন্তু এমন শুঁটকিবেলা কোথাও দেখিনি। যারা ফ্রেজারগঞ্জে গেছেন, তাঁরা শুঁটকিবেলা কথাটার অর্থ সহজেই বুঝতে পারবেন। অন্যদের সুবিধার্থে বলি, এখানকার তটভূমি বালি নয়, শুঁটকি মাছে পরিপূর্ণ। প্রতি পদক্ষেপে সেই শুষ্ক মৎস্যের সোহাগস্পর্শ, লবণাক্ত বাতাসে তাহাদের সুঘ্রাণ, তার আকর্ষণে রাশি রাশি বায়স পক্ষীর কুজন-কাকলি… আহা কি শোভা!
অনেক খুজেও সেই প্রাসাদটি কোন দিকে তা ঠাহর করতে না পেরে যখন ফিরে আসছি, হঠাৎ শুনতে পেলাম, “দেকোচ আমাদের পেঁপে গাচে কেমন নাউ হয়েচে।“ তাকিয়ে দেখি, আমাদের অজান্তেই কখন জানি না, এক দিগম্বর গাইড জুটে গিয়েছেন। এবং তিনি তাঁর ছোট ছোট হাত তুলে দেখাচ্ছেন, ফ্রেজারগঞ্জের অবশ্য দ্রষ্টব্য পেঁপে গাছ, যার শরীর বেয়ে উঠে গিয়েছে এক ফলন্ত লাউ গাছ। দেখে আমরা যা না আনন্দ পেলাম, তার দ্বিগুন আনন্দ পেলেন আমাদের গাইড। আনন্দের চোটে তিনি আমাদের পিছু নিলেন। ঘুরে ঘুরে দেখাতে লাগলেন তাঁদের গ্রাম। তাঁদের সমুদ্র।
ফ্রেজারগঞ্জের সমুদ্রটি গৃহপালিত বিশেষ। গ্রামের বাড়িতে যেমন খিড়কির পুকুর থাকে, এটি তেমনি খিড়কির সমুদ্র। শোয়ার ঘর,রান্নাঘর, গোয়ালঘরের পাশ কাটিয়ে চলতে চলতে হঠাৎ সামনে সমুদ্র। গ্রামের লোক সেখানেই নিত্যকর্ম সারেন, পোষা হাঁসগুলো সেখানেই সাঁতার কাটে। সত্যি কথা বলতে কি, পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে না দেখে, মৎস্যজীবীদের গ্রাম হিসাবে দেখলে ফ্রেজারগঞ্জকে নেহাত মন্দ লাগবে না। দড়িতে ঝোলানো শুঁটকি মাছগুলোকেও মন্দ লাগবে না, যখন দেখবেন তার লোভে আকাশে পাক খাচ্ছে খান তিনেক শঙ্খচিল। গ্রামের গঙ্গা মন্দিরটিও ভালই লাগবে। গঙ্গা মন্দিরের সামনে থেকে সমুদ্রের দিকে তাকালে চক্রবাল রেখার গায়ে মেঘের মতো একটা ছায়া দেখা গেল। গাইডবাবু বললেন, “ওটা জম্বুদ্বীপ। ওখানে যেউনি, খুব ঢেউ।“
*************
গঙ্গা মন্দিরের কাছে দাঁড়ালে আরও দেখা যায় চওড়া একটা খাঁড়ি স্থলপথের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলারগুলো এই খাঁড়ি দিয়েই সার বেঁধে ফ্রেজারগঞ্জের ফিশিং হারবারে পৌঁছায়। শুনেছি সে এক দারুন দৃশ্য। কিন্তু একটাও ট্রলার দেখতে পাচ্ছি না কেন? আমাদের বোধহয় দেরি হয়ে গেছে। মন্দিরের চাতালের উপরে উঠে দেখার চেষ্টা করছি, এমন সময় দূর থেকে শুভজিতের গলা শোনা গেল, “এই তোরা শিগগিরি আয়। জেটি থেকে মাছ কিনব। আজ মাছভাজা দিয়ে…”। এইসব ব্যাপারে ওরা সাধারণত আমাকে ডাকে না। কিন্তু আজ ডাকার কারণ আছে- টাকার থলি আমার কাছে।
কিন্তু জেটিতে গিয়ে দেখি সেখানেও সব ঢুঁ ঢুঁ। একটাও ট্রলার নেই। আছে কটা দেশি ভুটভুটি। তারই একটার মাঝির সঙ্গে খোশগল্প জুড়েছে শাম্ব। ভোরের হাওয়ায় শাম্বর মধ্যে বেশ কবি কবি ভাব এসেছে। সে মাঝিদের বলছে, “আপনারা তো জীবন হাতে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যান।“
মাঝিও বেশ বাকপটু। মনে হয় কলকাতার লোকদের এই সব গায়ে পড়া কথা শোনা তাঁর অভ্যাস আছে। তিনি বললেন, “আপনারাও তো জীবন হাতে নিয়ে কলকাতার রাস্তায় গাড়ি চালান। “
পৃথিবীতে সপ্তম রিপু বলে যদি কিছু থাকে তবে তা হল ‘বাড় খাওয়া’। কিছুক্ষন উভয়ে উভয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হওয়ার পর, শাম্বর মধ্যে সেই সপ্তম রিপুর প্রভাব দেখা দিল। সে বলল, “গাড়ি চালান আমার বাঁ হাতের খেল। আমি তো কলকাতা থেকে মদ খেতে খেতে এতো দূর গাড়ি চালিয়ে এসেছি। চাইলে আমি নৌকাও চালাতে পারি।“
মাঝি মহাশয় বোধহয় এরই অপেক্ষায় ছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে বললেন, “তবে তো আপনাকে নিয়ে জম্বুদ্বীপে যেতেই হবে। কলকাতার বেশির ভাগ লোক এমন ভিতু যে যেতেই চায় না। এই গোবিন্দ নৌকা লাগা, এতদিনে একটা সাহসী বাবু দেখা গেছে।“
নৌকা জেটিতে লাগতেই শাম্ব এবং তার দেখাদেখি অন্যরা লাফিয়ে লাফিয়ে নৌকায় উঠে পড়ল। বললাম, “শাম্ব ওই বাচ্চাটা বলছিল জম্বুদ্বীপে খুব ঢেউ।“
“আরে, তুমি চিরকাল ওই বাচ্চাদের কথাতেই নাচ। এবার পুরুষ হও বুঝেছ, পুরুষ। ”
আঁতে ঘা লাগল। বাড় খাওয়া সপ্তম রিপু হলে, ‘আঁতে ঘা লাগা’ অষ্টম। সেই রিপুর কবলে পড়ে আমিও এক লাফে নৌকায় উঠে পড়লাম। নৌকা জেটি ছেড়ে কিছু দূর এগোতেই শাম্ব উঠে দাঁড়িয়ে হে-হে-হে বলে চিৎকার করে উঠল। সেই চিৎকারের সঙ্গে সঙ্গে ভক করে একটা গন্ধ নাকে এসে ঢুকল। হায়! হায়! সাতসকালে খালি পেটে মাল গিলেছে হতভাগাগুলো।
“শাম্ব দাঁড়িয়ে থাকিস না । জলে পড়ে যাবি।“
“গেলে যাব। ফ্রেজারও তো ডুবে গেছিল। কত মেয়ে আমাকে উদ্ধার করার জন্য মুখিয়ে আছে। তুমি খালি তাঁদের মধ্যে একটাকে বাছাই করে দেবে।”
গোবিন্দ নামের সেই ছোকরাটি ফিসফিসিয়ে বলল, “আপনি চুপ মেরে বসে থাকেন। এখখুনি দ্যাখেন নিজে থেকেই বসে পড়বে।”
বলতে বলতে হঠাৎ গাড়ির ব্রেক কষার মতো একটা প্রবল ঝাঁকুনি। নৌকা যেন পাগলা ঘোড়ার মতো লাফিয়ে উঠল এবং লাফের পর লাফ দিতেই থাকল।
“কি হল রে গোবিন্দ?”
“এজ্ঞে নদী ছেড়ে সাগরে এসে পড়িচি।“
ওদিকে গোবিন্দর কথা সত্যি প্রমান করে, সব কটা বীরপুরুষ ধপধপ করে বসে পড়েছে। শুধু বসে পড়াই নয়, পশ্ছাদ্দেশ ঘষতে ঘষতে
ছাউনির ভিতরে গিয়ে ঢুকেছে। আমার মন বলছে, সেখানে ঢুকে চোখ বন্ধ করে থাকি। বিপদকে দেখতে না পেলে বিপদের ভয় একটু হলেও কমে। বাস রে সে কি দুলুনি! সে কি ঢেউ! নৌকার ডানদিকে ঢেউয়ের ঝাপটা লেগে বাঁদিকে জল ছিটকে যাচ্ছে। জীবনে অ্যায়সান ভয় খুব কমই পেয়েছি। প্রাণপণে একটা তক্তা ধরে বসে আছি। ফ্রেজারগঞ্জ কতটা পিছনে সেটা দেখার জন্য ঘাড় ঘোরাতেও ভয় করছে।
“সোমক সাঁতার জানিস?”
“সাঁতার জেনে লাভ হবেনি বাবু, জলে কামট আছে।”
এই কথা শুনে কিনা কে জানে, ছাউনির ভিতর থেকে একটা চাপা গুঁ-গুঁ শব্দ ভেসে এল। কোনও এক বীরপুরুষ কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে, কাঁপতে কাঁপতে জম্বুদ্বীপে যখন নৌকা পৌঁছাল তখন হড়হড় করে সবকটা একসঙ্গে বমি। বোধহয় ভয়ের চোটে এতক্ষন বমনেচ্ছা চাপা ছিল। নৌকার মধ্যে সে এক মাখামাখি অবস্থা।
কিন্তু নৌকার বাইরে প্রকৃতি আমার সামনে সে কী রূপ মেলে ধরল! সে কী আদিমতা! মস্তি-লোলুপ পর্যটকরা জম্বুদ্বীপের কৌমার্যকে এতটুকুও বিক্ষত করতে পারেনি। দ্বীপে জনপ্রাণী নেই, নির্জনতায় থমথম করছে দিগ্বিদিক। শুধু প্রথম ঋতুরক্তের মতো চাপচাপ লাল কাঁকড়া ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর অঞ্চলে। অগণ্য। একটানা সেদিকে তাকিয়ে থাকলে নেশায় ধরে, মাধবীর নেশা। সে নেশায় উন্মাদ কামুক সমুদ্র মুহুর্মুহু আছড়ে পড়ছে জম্বুদ্বীপের শরীরে। বাদাবনের গভীরে শ্বাসমূলে শ্বাসমূলে মৃত্তিকার গায়ে দিচ্ছে কাঁটা। ঝড়ো বাতাসে ভাসছে তার শীৎকারের শব্দ।
দ্বীপে একটা জেটি পর্যন্ত নেই। লাফ দিয়ে নামতে হয় কাদা জলে। সেদিন সেই কাদা জলে খর টান। তবুও মনে হল নামতে আমাকে হবেই। এই রূপকে স্পর্শ করতে হবে প্রতি অঙ্গ দিয়ে। তোমাকে আমি আকণ্ঠ পান করব, হে মাধবী। দ্বিধা কেন?
“নীচে নামবেন না বাবু। সমুদ্রের অবস্থা ভালো নয়।“
“হ্যাঁ বাবু দেখেন নি, আজ কেউ মাছ ধরতে যায়নি। ”
আজ ভাবলেও অবাক লাগে, এই কথা শুনে সেদিন শালাদের টেনে চড় কষাইনি কেন! সব জেনেশুনে আমাদের নিয়ে ওই খ্যাপা সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু সেদিন হয়তো নেশার ঘোরেই ওদের দিকে ক্ষমাসুন্দর চোখে তাকিয়েছিলাম।
নৌকা যখন ফ্রেজারগঞ্জে পৌছাল তখন তাদের নেশা কিছুটা কমলেও ভয়ের চোটে অর্ধেক প্রাণ বেরিয়ে গেছে। সেই হাফ মাতাল, হাফ মৃত প্রাণীগুলোকে টানতে টানতে যখন নৌকা থেকে নামাচ্ছি, মাঝি হঠাৎ চিৎকার করে কাকে ডাকল, “নারায়ণী, এ নারায়ণী।“ধাঁ করে মনে পড়ল, ফ্রেজার সাহেবের রক্ষাকর্ত্রী সেই মেয়েটির নাম ছিল নারায়ণী। ফ্রেজারগঞ্জের আসল নাম নারায়ণীতলা। বললাম,“শাম্ব, এখানে এখনও একটা নারায়ণী আছে। তোর ফ্রেজার সাহেব হওয়ার সাধ আর একটু হলেই মিটে যেত।“
শুনে শাম্ব ভ্যা করে কেঁদে উঠে বলল, “দাদা আমি বাড়ি যাবো।“
1 comment
হে মাধবি পরলাম।মনে প্রানে মিশে গেছিলাম।আমি বিবাহিতা,তাই এই জম্মুদিপ-এ যাবার ইছহা বা সাহস থাকলেও যেতে পারি নি।এই লেখনি পড়ে মনে খুব ইছা রইল জাব।।এমনি কন দল যদি পাই। লেখক ময়ূখ নস্কর কে অনেক ধন্যবাদ।