শুভজিৎ বোস
আমবাঙালির ধারণা, পাহাড় মানে বোধ হয় শুধু দার্জিলিং। গরম হোক বা শীত, বাঙালি কাতারে কাতারে ভিড় জমায় ওই দার্জিলিংয়ে। সেখান থেকে গাড়িওয়ালার চক্করে প্রভাবিত হয়ে ওই ফাইভ পয়েন্ট, সেভেন পয়েন্ট। এর বাইরে কজন আর বেরোতে পারলেন?
কিন্তু তার বাইরেও অন্য একটা দার্জিলিং আছে। সেটা কজন দেখেছেন? কত ইতিহাস পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে। পায়ে হেঁটে কজন আর ঘুরেছেন? সম্প্রতি পাহাড়ে শেষ হল পর্যটন উৎসব। খুব যে পর্যটকের সমাগম হয়েছিল, এমন নয়। তবু মন্দের ভাল। যে পাহাড়ে গত সাত–আট মাস লোক যাওয়াই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেখানে লোকজন যাওয়া শুরু করেছে, এটাই বড় ব্যাপার।
জিটিএ–র দায়িত্বে এখন বিনয় তামাং–অনীত থাপারা। বিনয় বলেছেন, নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। সত্যিই তিনি আন্তরিকভাবে বলেছেন কিনা জানি না। যদি সত্যি সদিচ্ছা থাকে, তাহলে সাধুবাদ জানাতেই হবে। পাহাড়ের আনাচে কানাচে এমন অনেক ছোট ছোট জনপদ আছে, যেখানে পর্যটকদের পায়ের ধুলো পড়েনি। দারুণ সুন্দর সুন্দর গ্রাম। সেখানে দারুণ পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে। কিন্তু পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। আর প্রচার তো একেবারেই হয়নি। এইসব গ্রামে অনায়াসে বাংলা ছবির শুটিং হতে পারে। নানা রকম অনুষ্ঠান হতে পারে এইসব পাহাড়ি গ্রামকে ঘিরে। সব অনুষ্ঠান দার্জিলিং–কেন্দ্রিক কেন হবে? এসব জায়গাকে প্রচারের আলোয় আনার নানা উপায় আছে। তার আগে সেখানে হোম স্টে তৈরি করতে হবে। সরকারকে, জিটিএ–কে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। একটা দার্জিলিংকে ভাঙিয়ে আমরা আর কতদিন খাব? আরও ছোট ছোট গ্রামকে পর্যটন কেন্দ্রের চেহারা দিতে হবে। একসঙ্গে অনেক পর্যটন কেন্দ্র খুঁজতে গেলে সব ঘেঁটে যাবে। তার থেকে বরং ছোট ছোট লক্ষ্য রেখে এগোনো ভাল। এই বছরের মধ্যে এমন দশটি জায়গা খুঁজে বের করা হোক। সেখানে কিছু পরিকাঠামো তৈরি করে জোরদার প্রচার শুরু হয়ে যাক। পুজোর আগেই বাঙালির নতুন ঠিকানা তৈরি হোক।