ধীমান সাহা
পুলিশের কী করা উচিত, পুলিশ জানে না। আমরা জানি। সিবিআই তদন্ত হচ্ছে? ওরাও তদন্তের ঘোড়ার ডিম বোঝা। আমাদের কাছে একটু শিখে নিলেই তো পারে। কোর্টে শুনানি চলছে? বিচারপতিরা আর কতটুকুই বা বোঝেন! আমরা ঢের ভাল বুঝি।
ডাক্তারের চিকিৎসায় কোথায় গন্ডগোল, আমি ঠিক ধরে ফেলি। কোন ওষুধের কী সাইড এফেক্ট, গুগল থেকে চুপি চুপি দেখে নিই। তারপর বুঝিয়ে দিই, ডাক্তার আসলে কিছুই বোঝে না। কোনও লেখক হয়তো খেটেখুটে কোনও উপন্যাস লিখলেন। আমি বলি, কিস্যু হয়নি। এটা আবার লেখা নাকি? লোকসভা বা রাজ্যসভার ক্লিপিংস ভেসে আসে। আমি বলি, ধুর এরা পার্লামেন্টে বলতেই শেখেনি। পাঠাতো আমাকে। দেখিয়ে দিতাম। যাই বলুন, বিরাট কোহলির ব্যাটিংয়ে কোথায় ত্রুটি, আমি কিন্তু ঠিক জানি। রাহুল দ্রাবিড় কেন যে শুধরে দিতে পারল না! আসলে, রাহুল ভাল খেলোয়াড় ছিল, কোচিংটা তেমন বোঝে না। রোনাল্ডোর ফিটনেসে কোথায় সমস্যা বা শ্রেয়া ঘোষালের কোন জায়গায় গানের সুর কেটে গেছে, এটাও কিন্তু আমি জানি।
আমরা সবজান্তা। আমরা আগে চায়ের দোকানে বসতাম। গুলতানি করতাম। কিন্তু এখন আর চায়ের দোকানে বসলে সেই স্টেটাস থাকে না। তাছাড়া, গরমে এতক্ষণ বসা মুশকিল। আমি এত সবজান্তা। আমার একটা প্রেস্টিজ আছে তো। আমার হাতে আছে স্মার্টফোন। আমার নামে–বেনামে খানকয়েক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। আমি সেখান থেকেই আমার বাণী প্রচার করব। আর মিনিটে মিনিটে লাইক গুনে যাব। কে কী কমেন্ট করছে, দেখে যাব। যদি লোকজন তেমন কমেন্ট না করে, আমি নিজেই বেনামে কমেন্ট করব। নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দেব। বলব, ‘দারুণ লিখেছেন দাদা, একেবারে ফাটিয়ে দিয়েছেন।’ যাই বলুন, মেঘের আড়াল থেকে এই যে যুদ্ধ করা। এর আনন্দই আলাদা।
আমি সময় পেলেই আপনাদের সমৃদ্ধ করি। আপনাদের কাজ সমৃদ্ধ করা। আমার নামে জয়ধ্বনি করা। যদি না করেন! চটপট লাইক, কমেন্ট করে ফেলুন। যদি না করেন, ফল ভাল হবে না কিন্তু।